Previous Lesson -- Next Lesson
১. জীবনের মুক্তপাপ অবস্থা প্রতিষ্ঠা পায় খোদার ওপর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে (রোমীয় ১২:১)
রোমীয় ১২:১
তাহলে ভাইয়েরা, আলস্নাহর এইসব দয়ার জন্যই আমি তোমাদের বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, তোমরা তোমাদের শরীরকে জীবিত, পবিত্র ও আলস্নাহর গ্রহণযোগ্য কোরবানী হিসেবে আলস্নাহর হাতে তুলে দাও৷ সেটাই হবে তোমাদের উপযুক্ত এবাদত৷
পুরাতন ব্যবস্থার অধিন লোকজন তাদের প্রতি কৃত খোদার কল্যাণমূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতেন এবাদত গৃহে দান উপহার প্রদানের মাধ্যমে৷ তারা নিজেদের প্রতীক বা বিকল্প হিসেবে দান উপহার দিতেন প্রত্যেক জানা পাপের জন্য এক একটি পশু কোরবানী, আর তেমন উত্সর্গের মাধ্যমে খোদার সামনে নিজেদের মুক্তপাপ মনে করতো৷ জেরম্নজালেমের এবাদতখানা ধ্বংসের পরবতর্ী সময়ে পৌল মসিহে বিশ্বাসী ভক্তদের পরামর্শ দিয়েছেন, তারাও অবশ্য পুরাতন ব্যবস্থার অধিনস্থ লোক ছিলেন, আর তারা রোমে বসবাস করতেন, তারা যেন অর্থ ও জীব-জানোয়ার খোদার নামে কোরবানী না দেয়৷ পরিবর্তে তারা নিজেদের গোটা দেহ-মন-আত্মা সম্পূর্ণ পূতপবিত্রভাবে মসিহের পিতার কাছে সমর্পণ করে৷ এমন ধরণের সমর্পণই প্রমাণ করবে তারা আর নিজেদের ইচ্ছাধিন চলছেন না কিন্তু সম্পূর্ণভাবে একমাত্র খোদার হাতে সমর্পিত৷
এ বিষয়টি একটি সুনিশ্চিত প্রশ্নের অবতারণা করে যা প্রত্যেক বিশ্বাসীর সাথে রয়েছে সম্পৃক্ততা আপনি কি অদ্যাবধি আপনার নিজের অধিকারে স্বেচ্ছায় জীবন-যাপন করছেন, অথবা মসিহের দ্বারা নাজাতের বিষয়কে স্বীকার করে খোদার হাতে নিজেকে সমর্পণ করেছেন?
এ সমর্পণের অর্থ এ দাঁড়ায় না যে, প্রত্যেকটি সমর্পিত মসিহি নিজেকে মৃতু্যর হাতে সঁপে দিয়েছে, কিন্তু তারা আর অলস জীবন-যাপন করে না, নিজেদের কাছে প্রাপ্ত যেটুকু সুযোগ রয়েছে তা দিয়ে খোদার সেবা কর্মে যুক্ত হয়ে গেছে, অর্থাত্ ঐকানত্মিকতা, দেহ-মন-আত্মা, অর্থ-সম্পদ আর যা কিছু রয়েছে তার সবটুকু দিয়ে৷ এ কোরবানী অবশ্যই চাহিদা প্রলোভন, দেহের কামনা-বাসনা যা আত্মার বিরম্নদ্ধে যুদ্ধ করে, আর মাংসিক ইচ্ছা আকাঙ্খা (গালাতীয় ৫:১৭)৷ এ আয়াতের ব্যাখ্যারূপে, পৌল নিজের কথা নিজেই বলেছেন, 'আমাকে মসিহের সঙ্গে সলিবে হত্যা করা হয়েছে৷ তাই আমি আর জীবিত নই, মসিহই আমার মধ্যে জীবিত আছেন' (গালাতীয় ২:১৯-২০)৷
পৌল নিজেকে মসিহের মধ্যে এতটাই লীন করে নিয়েছেন যেন তিনি মৃত, মসিহ ছাড়া তার নিজস্ব কোনো কিছুই বলার নেই, আর যে জীবন মসিহ তাকে দিয়েছেন সেই জীবন নিয়ে বেঁচে আছেন পাক-রূহের মাধ্যমে৷ এই একই ধারণায় পৌল আপনাদেরকেও নিজ নিজ দেহ ও জীবন খোদার হাতে ও তাঁর পুত্রের হাতে তুলে দিতে বলছেন যাতে আপনি ধার্মিক ব্যক্তিতে হতে পারেন পরিণত৷ মসিহ তাঁর রক্তে আপনাকে স্নাতশুভ্র করে তুলবেন আর হৃদয়ে বসবাস করার জন্য পাকরূহ পাঠাবেন যেন আপনি জীবনত্ম কোরবানীর পবিত্র মেষে পরিণত হতে পারেন যা হবে খোদার গ্রহণযোগ্য কোরবানী৷ এ উভয় উপহার, মসিহের পূতপবিত্র রক্ত আর হৃদয়ে শততঃ বাস করার জন্য পাকরূহ দত্ত হলো হলো আপনার জন্য অননত্ম জীবন৷ তাই আপনার বেহেশতি পিতার কাছে ফিরে আসুন পেয়ে যাবেন অফুরনত্ম আর্শিবাদ, যেন নতুনভাবে তার পবিত্র পরাক্রম দিয়ে তিনি নিত্যদিন আপনাকে রাখেন পরিপূর্ণ৷
প্রেরিত পৌল মসিহিদের পরিপূর্ণ সমর্পণের কথা বলেছেন যেমনঃ 'সেটাই হবে তোমাদের উপযুক্ত সেবা' (রোমীয় ১২:১)৷ খোদার সেবার ক্ষেত্রে হৃদয় থেকে উত্সারিত আনন্দগান অপরিহার্য, আর আপনার প্রার্থনা ও অনুরোধের রয়েছে মহাপরাক্রম, কিন্তু খোদা প্রত্যাশা করেন আপনার সমর্পনের চুড়ানত্ম সিদ্ধানত্ম আর তা হতে হবে অননত্মকাল ধরে ও সম্পূর্ণরূপে৷ এটাই হলো সুসমাচার প্রচারকারীর সমর্পণ, যা কেবল একবারই ঘটে থাকে৷ তখন নতুন ব্যবস্থা আপনার জীবনে প্রযুক্ত ও কার্যকর হয়ে গেল আর সাথে সাথে লভ্য হলো আপনার অননত্ম জীবন৷
প্রার্থনা: হে বেহেশতি পিতা, আমরা তোমার সেবা করি, আনন্দ করি, কারণ মসিহের রক্তের মূল্যে তুমি আমাদের করম্ননাময় পিতার অধিকার দিয়েছো৷ আমাদের সাহায্য করে, আমরা যেন স্বার্থপরের জীবন যাপন না করি অথবা কৃপনের মতো হয়ে না পড়ি, কিন্তু ও সময় আমাদের সামর্থ, আর নিজেদের যেন তোমার পুত্রের হাতে সমর্পণ করি, সাথে সাথে পাপ ও নাপাকি প্রত্যাখ্যান করে চলতে পারি৷ তোমার প্রেম আমাদের মধ্যে ঢেলে দাও যেন আমরা তোমার দয়ার প্রাচুর্যে সদা বসবাস করে চলতে পারি৷
প্রশ্ন: