Previous Lesson -- Next Lesson
২. মসিহের সত্য নিশ্চয়তা দেয় সমস্ত প্রকার সমস্যা থাকা সত্ত্বেও আমাদের সহভাগিতা রয়েছে খোদার সাথে (রোমীয় ৮:৩১-৩৯)
রোমীয় ৮:৩১-৩২
৩১. তাহলে এই সব ব্যাপারে আমরা কি বলব? আল্লাহ যখন আমাদের পক্ষে আছেন তখন আমাদের ক্ষতি করবার কে আছে? ৩২. আল্লাহ নিজের পুত্রকে পর্যন্ত রেহাই দিলেন না বরং আমদের সকলেল জন্য তাঁকে মৃতু্যর হাতে তুলে দিলেন৷ তাহলে তিনি কি পুত্রের সঙ্গে আর সব কিছুও আমাদের দান করবে না?
আমাদের নিয়ে খোদার চিন্তাধারা, নাজাতপ্রদান ও পূর্ব থেকে বাছাই করণ ইত্যাদি নিয়ে বিশ্লেষণের পরে পৌল আমাদের মনোনয়ন নিয়ে আমাদের নিশ্চিন্ত করলেন, তারপর তিনি নাজাতের সত্য প্রকাশ করলেন, যেন আমরা জানতে পারি খোদা প্রকৃত ঐতিহাসিক সত্যের ভিত্তিতে গোটা বিশ্বের নাজাতের ব্যবস্থা সুনিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন৷
পৌল আপন হৃদয়ে নিশ্চিত ছিলেন এবং অভ্রান্তভাবে মনে মনে সন্দেহ মুক্ত ছিলেন যে খোদা তার শত্রু নন বরং তাঁর সর্বক্ষণের জন্য বিশ্বস্ত বন্ধু, তাতে যে কোনো মারাত্মক পরিস্থিতিই আসুক না কেন৷ অধিকন্তু, তিনি বিশ্বাস করতে পেরেছিলেন যে বেহেশত ও দুনিয়ার সর্বশক্তিমান স্রষ্টা আমাদের পিতা৷ পৌর খোদার মহব্বতে নির্ভর ও বিশ্বাস রেখে জীবনভর তাঁর কর্মকান্ড চালিয়ে গেলেন৷ সমস্ত কর্মকান্ড যে খোদার মহব্বত ও ইচ্ছা পরিচালনায় হচ্ছে সংঘটিত তা তিনি নির্বিবাদে মেনে নিলেন৷ তাঁর ওপর ঐশি আশির্বাদের বিষয়ে জানতে পেরে তিনি হতে পেরেছেন উদ্বেগ মুক্ত৷
যে বিশ্বাস পাহাড় পরিমাণ পাপরাজি অপসারণ করার ক্ষমতা রাখে ও পাপে পড়ে থাকা লক্ষকোটি মৃত লাশ পুনর্জিবিত করার ক্ষমতা রাখে তেমন বিশ্বাসের বিষয়ে পৌল কি করে সুনিশ্চিত হতে পেরেছিলেন? মসিহের সলিবই হলো তাঁর কাছে খোদার উক্ত প্রেমের নিশ্চয়তা জ্ঞান৷ সলিবে আত্ম কোরবানির মাধ্যমেই তিনি নিশ্চিত হতে পেরেছেন পবিত্র সত্ত্বার অনুকম্পা তাদের ওপর ঝর্ণাধারার মতো উপচে পড়ে, কেননা তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে আমাদের জন্য কোরবানি দিয়েছেন আমাদের পাপের কাফফারা পরিশোধ করার জন্য যেন যারা তাঁর ওপর বিশ্বাস ও নির্ভর করে তারা যেন বিনষ্ট না হয়৷
আমরা যারা অন্তরে অবাধ্য ও পাপী তারা পবিত্র হৃদয়ে দুঃখ দেই, আর তাঁর পুত্রের মধ্য দিয়ে যে মহিমা প্রকশ হতে যাচ্ছে তা অস্বীকার করি৷ বেহেশতে এমন কোনো আশির্বাদ অবশিষ্ট নেই যা তাঁর পুত্রের মধ্য দিয়ে তিনি আমাদের জন্য দান করেন নি, কেননা তাঁর যা কিছু আছে তার সবটুকুই তিনি আমাদের দান করেছেন৷ তাহলে আপনার আরাধনা কোথায়? কেন আপনার সবকিছু তাঁর হাতে তুলে দিচ্ছেন না?
রোমীয় ৮:৩৩-৩৪
৩৩. আল্লাহ যাদের বেছে নিয়েচেন কে তাদের বিরুদ্ধে নালিশ করবে? আল্লাহ নিজেই তো তাদের নির্দোষ বলে গ্রহণ করেছেন৷ ৩৪. কে তাদের দোষী বলে স্থির করবে? যিনি মরেছিলেন এবং যাঁকে মৃতু্য থেকে জীবিত করাও হয়েছে সেই মসিহ ঈসা এখন আল্লাহর ডান পাশে আছেন এবং আমাদের জন্য অনুরোধ করছেন৷
আপনি হয়তো ভাবতে পারেন নাজাত ও ঐশি প্রতিজ্ঞাসমূহ কেবল ধার্মিক ও পরিপক্ক বিশ্বাসীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, আর আপনি হলেন শিক্ষানবিস, অকৃতকার্য দুর্বল নড়বরে আর অপবিত্র৷ স্থির হউন আর আপনার জন্য খোদার বিচারের কথা শুনুন৷ তিনি আপনাকে ধার্মিক হিসেবে গণ্য করেছেন, আপনি স্নাতশুভ্র, এর কারণ এ নয় যে আপনি ভাল অথবা সফলকাম ব্যক্তি, তবে আপনার বিশ্বাস করুনাময় খোদার ওপর রয়েছে, যুক্ত হয়েছেন তাঁর সাথে, আর একাকী তাঁর কাছ থেকে প্রত্যাশা করছেন নাজাতের শক্তি বলে৷
আপনি হয়তো শয়তানে বক্রোক্তিতে কর্ণপাত করেছেন, যার ফলে আপনার নিরবতা খোদার ইচ্ছাতেই হয়েছে৷ পাকরূহ স্পষ্টভাবে বলছে 'না'৷ তিনি আপনাকে স্বান্তনা দিচ্ছেন খোদার সুচিন্তিত পরামর্শে, আপনার চোখের সামনে মসিহের সলিববিদ্ধ অবস্থা তুলে ধরেছেন, আপনাকে স্মরণ করে দিচ্ছে তার মৃতু্য থেকে পুনরুত্থানের ঘটনা, যার ফলে আপনি ধীরস্থির হতে পারেন, পুনর্মিলন বাস্তবায়িত হচ্ছে আর খোদা তা মেনে নিচ্ছেন৷ মৃতু্যর ওপর বিজয়ী বেহেশতে আরোহন করলেন৷ তিনি আপনার জন্য করুনার পারাবারের মধ্যস্ততা করে চলছেন, আর আপনাকে ধার্মিকতার অধিকারের অংশিদার করেছেন তার পূতপবিত্র রক্তের মূল্যে৷ তাই খোদার সম্মুখে আপনার রয়েছে একজন সুপারিশকারী৷ নিজেকে একাকিত্ত্ব ভাববেন না, প্রিয় ভ্রাতা, খোদার রহমত রয়েছে আপনার সাথে, আর তার উদ্দেশ্য হলো আপনার নাজাত, কোনোমতেই আপনার ধ্বংস নয়৷ মসিহ হলেন আপনার নাজাতের জামিনদার৷
আপনি হয়তো মৃতু্যকে ভয় পাচ্ছেন৷ তথাপি, মনে করুন মসিহ মৃতু্যকে জয় করেছেন এবং সত্যিকারভাবে মৃতাবস্থা থেকে পুনর্জাত হয়ে উঠেছেন আর খোদাই জীবন তিনি আপনাদের কাছে অর্থাত্ চোখের সামনে প্রদর্শন করেছেন৷ আপনি যদি নতুন সৃষ্টি হয়ে থাকেন তবে তাঁর অনন্ত জীবন রয়েছে আপনার মধ্যে৷ উক্ত জীবন কখনোই শেষ হবে না, কেননা খোদার মহব্বত কোনো অবস্থাতেই ব্যর্থ হয় না৷ ত্রিত্ত্বপাক থেকে বিচ্ছিন্ন করার ক্ষমতা মৃতু্যর হতে নেই৷
রোমীয় ৮:৩৫-৩৭
৩৫. কাজেই এমন কি আছে যা মসিহের মহব্বত থেকে আমাদের দূরে সরিয়ে দেবে? যন্ত্রণা? মনের কষ্ট? জুলুম? খিদে? কাপড়-চোপড়ের অভাব? বিপদ? মৃতু্য? ৩৬. পাক-কিতাবে লেখা আছে, তোমার জন্য সব সময় আমাদের কাউকে না কাউকে হত্যা করা হচ্ছে; জবাই করার ভেড়ার মতই লোকে আমাদের মনে করে৷ ৩৭. কিন্তু যিনি তোমাদের মহব্বত করেন তাঁর মধ্য দিয়ে এই সবের মধ্যেও আমরা সম্পূর্ণভাবে জয়লাভ করছি৷
পৌল কোনো কল্পনাজগতের কবি ছিলেন না, তিনি যে সকল সমস্য ও সাফল্যের বর্ণনা দিয়েছেন, ওগুলো বাস্তবে তিনি মোকাবেলা করেই তবে বর্ণনা দিয়েছেন৷ তিনি আমাদের কাছে একারণে সাক্ষ্য দিয়েছেন যেন আমরাও মসিহের জন্য তেমন কষ্ট সহ্য করতে পারি, প্রস্তুত থাকি, পিতা, পুত্র ও পাকরূহের ওপর বিশ্বাস আমাদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের নিশ্চয়তা দান করে না, যেমন মসিহের জীবনের দিকে লক্ষ্য করতে পারেন৷ তিনি পাকরূহের দ্বারা জন্ম নিলেন, আর সলিবে প্রাণ দিলেন তাদের হাতে যারা ছিল এই জগতের লোক, মন্দ আত্মার দ্বারা পরিচালিত৷ পৌল অভাব ও প্রাচুর্য উভয় উপভোগ করেছেন, রোগে ভুগেছেন, দুর্বল হয়েছে, বিপদ ও অত্যাচার ভোগ করেছেন, বিপক্ষ ভাইদের হাতে কষ্ট পেয়েছেন এবং জাহাজডুবির শিকার হয়েছেন৷ এ সকল তার কাছে গুরুত্বের বিষয় ছিল না, কেননা তিনি মসিহের মহব্বত ও দুরদর্শিতা সময়োপযোগী ব্যবস্থার বিসয়ে স্থির ছিলেন, আর তাই ছিল সকল প্রকার হতাশা প্রলোভন ও বিপদের চেয়েও অনেক মহান মূল্যবান৷ তদ্রুপ আপনার বিশ্বাস বিজয়ী হয়ে প্রকাশ পাবে যতোই মারাত্মক বিপদ ও ঝুকি আপনাকে নাস্তানাবুদ করে তুলুক, এমন কি আপনার মৃতু্যর ক্ষণেও, কেননা পাকরূহ আপনার বিশ্বাস নিয়ত বাড়িয়ে তুলবেন আপনার সম্পূর্ণ বদলে না যাওয়া পর্যন্ত, আর যতক্ষন পর্যন্ত আপনি খোদার পাঠশালায় প্রবেশ না করেন, যেখানে শিক্ষা পাঠ রয়েছে বিনম্রতা, আস্থা আর সমস্যা ও বিপদের মধ্যেও খোদার প্রশংসা করা৷ তখন আপনি হয়ে গেলেন খোদার মেষ মসিহকে অনুসরণ করার জন্য৷ অভিযোগ ছাড়া আপনি সবকিছুই বহন করে চলুন, আর মর্যাদা ও অহমিকার কাছে মৃতু্য বরণ করুন৷ প্রতিবেশিদের হাতে আপনার যতই ক্ষয়ক্ষতি হোক না কেন তা বড় সমস্যা মনে না করে প্রভুর ক্ষমতা ও রহমতের দিকে ধৈর্য ও আনন্দে অপেক্ষা করুন৷
কোনো ধরণের প্রলোভন ও সমস্যা মসিহের হাত থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারে না, কেননা সমস্যা আমাদের শিক্ষা দেয় কালামের দিকে দৃষ্টিপাত করতে৷ তখন আমরা মসিহের অপেক্ষা করবো, কেননা তিনি আমাদের নিয়ে চলেন পিতার সান্বিদ্ধে৷ তিনি আমাদের বুঝতে পারেন, তিনি কখনোই আমাদের ত্যাগ করেন না, বরং সঙ্গ দান করেন, শক্তি বাড়িয়ে তোলেন, যেন আমরা তাঁর মহান প্রেম ও সম্মান ও স্থিরতা, ধন্যবাদ ও দয়া প্রত্যক্ষ করতে পারি৷ মসিহের প্রেম গৌরবোজ্জল বিজয়ের পথে আমাদের চালনা করে, আর আমরাও সমস্যা ও অস্রুজলে তাঁর সেবা করে চলি৷
প্রার্থনা: হে পবিত্র খোদা তুমি আমাদের পিতা, আর তোমার পুত্র আমার সুপারিশকারী, অদ্যকার জন্য এবং শেষ বিচারের দিনের জন্য, আর পাকরূহ আমার মধ্যে বাস করেন, স্বান্তনা দান করে চলেন নিয়ত৷ আমি আপনার আরাধনা করি পিতা, পুত্র ও পাকরূহ যিনি হলেন জীবন্ত প্রেম৷ আমি বিশ্বাস করি, আমার কখনোই মৃতু্য ঘটবে না, কেননা তুমিই আমাাকে ঘিরে রেখেছো, সুরক্ষা করে চলছো, ভালো রেখেছো, আর নতুন জীবন দান করেছো৷ হে খোদা সকল প্রলোভন থেকে আমাকে বাঁচাও, যেন কোনো পাপই না পারে তোমার থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন করতে, আর আমার প্রেম পৃথিবীর সমস্ত ধার্মিকের প্রেম যেন কখনোই হয়ে না পড়ে অপসারিত৷
প্রশ্ন: