Previous Lesson -- Next Lesson
১. বিশ্বাসিগণ নিজেদেও পাপে মৃত ভাবলো (রোমীয় ৬:১-১৪)
রোমীয় ৬:৫-১১
৫. মসিহের সঙ্গে মরে যখন তাঁর সঙ্গে আমরা যুক্ত হয়েছি তখন তিনি যেমন মৃতু্য থেকে জীবিত হয়ে উঠেছেন, ঠিক তেমনি করে আমরা তাঁর সঙ্গে জীবিতও হব৷ ৬. আমরা জানি যে, আমাদরে গুনাহ স্বভাবকে অকেজো করবার জন্যই আমাদের পুরানো 'আমি' কে মসিহের সঙ্গে ক্রুশের উপরে হত্যা করা হয়েছে যেন গুনাহের গোলাম হয়ে আর আমাদের থাকতে না হয়; ৭. কারণ যে মরেছে সে গুনাহের হাত থেকে ছাড়া পেয়েছে৷ ৮. আমরা যখন মসিরেহ সঙ্গে মরেছি তখন ঈমান রাখি যে, তাঁর সঙ্গে জীবিতও থাকব৷ ৯. আমরা জানি মসিহকে মৃতু্য তেকে জীবিত করা হয়েছিল বলে তিনি আর কখনও মরবেন না, অর্থাত্ তাঁর উপরে মৃুত্যর আর কোন হাত নেই৷ ১০. তিনি যখন মরলেন তখন গুনাহের দাবি-দাওয়ার কাছেও মরলেন; তাঁর উপর আর এখন তিনি জীবিত হয়ে আল্লাহর জন্য বেঁচে আছেন৷ ১১. ঠিক সেভাবে এই কথার উপর ভরসা করো যে, মসিহ ঈসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছ বলে গুনাহের দাবি-দাওয়ার কাছে তোমরাও মরেছ, আর এখন আল্লাহর জন্য তোমরাও বেঁচে আছ৷
আপনি কি জানেন আপনার কলুষিত পাপের জন্য মসিহ সলিবে নির্যাতন সহ্য করে সত্যিকারভাবে মৃতু্য বরণ করেছেন৷ আপনার পাপ ও কলুষতার জন্য আপনাকেই তাড়িয়ে লাঞ্চিত হয়ে মৃতু্য বরণ করা দরকার ছিল, আর অনন্ত দোযখে চিরদিনের জন্য দুর্ভোগ পোহানো প্রয়োজন ছিল৷ যাহোক মসিহ আপনার দোষের জন্য নিজেই খোদার বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন, আর অভিশপ্ত সলিবে মৃতু্য বরণ করার জন্য রাজী হয়েছেন, আপনি বেঁচে গেছেন৷
আপনি যদি নাজাতদায়ী মহব্বত ও মসিহের ভূমিকা গ্রহণ করে থাকেন, আপনি আপনার পাপের জন্য হবেন লজ্জিত, আর অপরাধের বিষয় নিয়ে না চিন্তা করবেন না তাতে নিয়োজিত হবেন৷ ফলে আপনি নিজেকে ঘৃণা ও অস্বীকার করবেন৷ আপনি নিজেকে আর গণ্য করবেন না, কিন্তু নিজের প্রতি ঘৃণা জম্মিবে, আর নিজেকে দোষী বলে সাব্যস্থ করবেন৷ নিজেকে মৃতুবত্ ও ক্ষয়িষ্ণু বলে বিবেচনা করবেন৷ আপনার জন্য নাজাতের আর কোনো পথ খোলা নেই, আপনার কলুষিত বিবেকের ও একগুয়েমির জন্য মসিহের এ রুহানি মৃতু্য আপনার রুহানি জীবনে মসিহের বেঁচে থাকাই হলো একমাত্র মুক্তি৷
নিজেকে অস্বীকার না করে মসিহকে অনুসরণ করা সম্পূর্ন অসম্ভব৷ পৌল প্রাথমিকভাবে সাখ্য দিয়েছেন, যে বিষয়টি তার পত্রে উল্লেখ করেছেন 'আমরা মসিহের সাথে মৃতু্যবরণ করেছি এবং হয়েছি তাঁর সাথে পুনরুত্থিত যেন তার সাথে সঙ্গতি রেখে জীবন যাপন করতে পারি; জানি, যিনি সলিববিদ্ধ হন তিনি চাইলেই নিজের ইচ্ছামতো আর একা চলতে পারে না, কিন্তু হলেন মহিমান্বিত আর প্রাণ দিলেন মৃতু্য যাতনা সহ্য করে৷
পৌল সাখ্য দিয়েছেন, আমাদের মৃতু্য তখনই হয়ে গেছে যখন আমরা সলিবে হত মসিহের উপর বিশ্বাস ও আস্থা রেখেছি৷ উক্ত মুহুর্তে আমরা মসিহেই মৃতু্যর সাথে হয়ে গেছি যুক্ত, আর আমরা স্বীকার করি তাঁর মৃতু্যই হলো আমাদের মৃতু্য৷ আইনানুগভাবে আমরা মারা গেছি, নীতিগতভাবে বর্তমান জীবন ও তার ইচ্ছা আকাঙ্খার আর কোনো অধিকার থাকতে পারে না, কেননা খোদার গজব মসিহের মাধ্যমে আমাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলেছে৷
যেমন দেওয়ানী আইন মৃত ব্যক্তির কোনো অধিকারের স্বীকৃতি দেয় না, তাই মৃত ব্যক্তির উপর আইনেরও কোনো অধিকার বা এখতিয়ারও থাকতে পারে না৷ প্রলোভন আমাদের কলুষিত দেহে আর কার্যকর হতে পারে না কেননা আমরা দেহকে মৃত বলে মনে করে থাকি৷
যাহোক, অনেকে মনে করেন তারা মুমুর্ষু বা অর্ধমৃত, কিন্তু অদ্যাবধি তাদের ফুষফুস ধুকধুক করে চলছে, তেমন ব্যক্তিবর্গ চলতে চেষ্টা করতে পারে৷ মনে করুন, একজন মৃত ব্যক্তি তার কঙ্কালসার দেহ নিয়ে জেগে ওঠে চলতে শুরু করলো আপনার শহরের রাস্তায়, তখন সকল লোক পালিয়ে বাঁচবে তার কাছে থেকে, পালিয়ে যাবে তাঁর শরীরের দুর্গন্ধের হাত থেকে বাঁচার জন্য৷ একজন মসিহি পুনরায় যদি তার পুরাতন পাপের জীবনে ফিরে যায়, তার দোষিত কর্মকান্ড আচার-আচরণ পুনরায় শুরু করে, নিজের ঘৃণিত কামনা বাসনার হাতে আবার বন্দি হয়ে পড়ে তবে আর মারাত্মক কি হতে পারে? নিজেকে সদা অস্বীকার করার মাধ্যমে প্রস্তুত হয় বিশ্বাসে উপযুক্ত ক্ষেত্র৷ মসিহের মধ্যে আমরা সদা সর্বদা মৃত বলে মনে করি৷
আমাদের বিশ্বাস কোনো নেতিবাচক বিষয়কে সমর্থন করে না, যেমন আমাদের পুরাতন কলুষিত মানুষটিকে ফেলে দিতে ও অস্বীকার করতে হবে, আর আমাদের ভাবতে হবে সলিববিদ্ধ বিজয়ী ব্যক্তিবর্গ হিসেবে৷ আমাদের বিশ্বাস ইতিবাচক বিশ্বাস৷ এ বিশ্বাস জীবনের বিশ্বাস, মসিহের সাথে আমাদের প্রেমের বন্ধন তার পুনরুত্থানের ভাগিদার আমাদের অংশ রয়েছে৷ মসিহ যেমন তার কবর ছেড়ে এসেছেন নীরবে, আর তাঁর রুহানি দেহ পাথরের দেয়াল ভেদ করে এসেছে বেরিয়ে, তাই যে কেউ তাকে বিশ্বাসে গ্রহণ করে সে মসিহের দ্বারা পোশাকের মত আবৃত হয়, আর জানতে পারে প্রভুর অনন্ত জীবন যে তাকে প্রত্যয়ের সাথে ধরে রাখে তার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়৷
মসিহ মৃতের শক্তিকে জয় করে উঠেছেন, তাঁর আসন শত্রুর কোনো ক্ষমতা নেই পবিত্র জনের ওপর৷ মসিহ খোদার মেষশিশু হিসেবে প্রাণ দিয়েছেন আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত শোধ দেবার জন্য, তিনি আমাদের অনন্ত নাজাত দিয়েছেন৷ তার মৃতু্য খোদা ও মানুষের সেবার জন্য হয়েছে সাধিত৷ আজ পুনরুত্থিত মসিহ মানুষ ও খোদার পক্ষে চুড়ান্ত সেবা দানের জন্য প্রস্তুত, তিনি পিতার গৌরব রক্ষা করার জন্য রয়েছেন শততঃ প্রস্তুত যেন বহুসংখ্যক পুত্র কন্যা হতে পারে পুর্নজাত, তাদের ভালো আচরণের দ্বারা তাঁর নামের প্রশংসা যেন হতে পারে৷
আমাদের বিশ্বাসের নিদর্শন আপনি কি চেনেন? আমরা সম্পূর্ণভাবে নিজেদের অস্বীকার করি, যখন আমরা আমাদের পাপের কথা স্বীকার করি যে তা সলিবে সমাপ্ত হয়েছে৷ এ কারণে মসিহ তাঁর জীবনের শক্তি আমাদের জীবনে রোপন করেছেন যেন আমরা রুহানিভাবে হতে পারি পুনরুত্থিত এবং খোদার জন্য বেগুনাহ জীবন করতে পারি যাপন, বেঁচে থাকতে পারি অনন্তকালের জন্য ধার্মিকতার সাথে, যেমন মসিহ মৃতু্য থেকে হয়েছেন পুনরুত্থিত, বেঁচে আছেন ও রাজত্ব করে চলছেন অনন্তকালের জন্য৷
যাই হোক, মসিহ এবং আমাদের মধ্যে এক সুগভীর পার্থক্য রয়েছে৷ তিনি নিজেই অনন্ত কাল ধরে পূতপবিত্র, আমরা তাঁর সাথে যুক্ত হবার ফলে বিশ্বাসে প্রকৃত পবিত্রতা লাভ করি৷ প্রেরিত আমাদের কেবল খোদার সেবা করার জন্যই অনুরোধ করেন নি বরং মসিহের মধ্য দিয়ে তা করতে পরামর্শ দিয়েছেন৷ আমাদের নিজেদের তরফ থেকে পবিত্রজনের কাছে আমার কোনো অধিকার নেই, যখন আমরা মসিহের মধ্যে ডুবে যাই, আর আমাদের স্বার্থপরতা তাঁর প্রেমে নিশ্বেশিত হয়ে যায়, তখনই আমরা তাঁর মধ্যে জীবন যাপন করতে থাকি৷ আমাদের মধ্যে পরাক্রম, মমতা এবং কাজ করার আনন্দ বইতে থাকে তখনই তাঁর প্রেমে যিনি আমাদের প্রেম করে থাকেন আমাদের দুর্বলতা শেষ হয়ে যায়৷ বিশ্বাস ও ভগ্নান্তকরণে আমরা কেবল এই সুযোগটুকু কাজে লাগাতে পারি৷ আপনি কি বিশ্বাস করেন সম্পূর্ণরূপে আপনি সলিববিদ্ধ হয়েছেন এবং কবরপ্রাপ্ত মসিহের সাথে, আর তার পুনরুত্থানে আপনিও সত্যিকারভাবে হয়ে ওঠেছেন পুনরুত্থিত?
প্রার্থনা: হে পবিত্র প্রভু মসিহ, আমার বিকল্প হিসেবে সলিবে তুমি কোরবানি হয়েছো৷ তুমি আমার পাপরাজি ও অপমান বহন করেছো৷ তোমাকে ধন্যবাদ দেই এ মহান ও মমতাপূর্ণ নাজাত দানের জন্য৷ আমার আত্মত্যাগ পরিপূর্ণভাবে করার জন্য সাহায্য করো, তোমার জ্ঞানে আমাকে প্রতিষ্ঠা করো যেন বুঝতে পারি আমার মৃতু্য হয়েছে, এবং আমি নিজেকে তোমার মৃতু্যর সাথে নিজেকে মৃত হিসেবে মনে করতে পারি৷ তোমার যাতনা সহ্য করার জন্য এবং তোমার পরিকল্পনার জন্য ধন্যবাদ দেই৷ তোমাকে ধন্যবাদ দেই, তুমি তোমার জীবন আমার মধ্যে প্রবাহিত করেছো বলে, যেন তোমার জন্য আমি বেঁচে থাকতে পারি, তোমার পিতার গৌরব সাধন এবং তোমার সাথে ইমানে যুক্ত থাকতে পারি৷ হে পবিত্র প্রভু, অপরাধীদের তুমি সাধুসন্তে করেছো পরিণত এবং পিতৃহীন সন্তানদের পিতার সাথে জীবন যাপন করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছো, তারা আজ তোমার মধ্যে জীবন যাপন করছে৷ কতইনা সুমহান তোমার করুনা! আমাদের আরাধনা ও আমাদের জীবন কবুল করে নাও৷
প্রশ্ন: