Previous Lesson -- Next Lesson
৩. ঈসা মসিহের বিদায়কালীন শান্তি (যোহন ১৪:২৬-৩১)
যোহন ১৪:২৬
২৬. সেই সাহায্যকারী, অর্থাত্ পাকরূহ, যাঁহাকে পিতা আমার নামে পাঠাইয়া দিবেন, তিনিই সমস্ত বিষয় তোমাদের শিক্ষা দিবেন, আর আমি তোমাদের যাহা কিছু বলিয়াছি সেই সমস্ত তোমাদের মনে করাইয়া দিবেন৷
সাহস করে কে একথা দাবি করতে পারে যে ঈসা মসিহের সকল বাক্যের অর্থ সে উপলব্ধি করেছে? এবং কে তার সব কথা মুখস্ত করতে পারে অথবা সেগুলো সম্পাদন করতে পারে? প্রভুর ভোজে উপস্থিত অস্থির সাহাবিরা বিবেচনা করছিল বিশ্বাস ঘাতকের দুস্কর্মের ব্যাপারে এবং সম্ভবত সে কি করতে পারে সে বিষয়ে৷ ঈসা মসিহ বিদায়কালীন ভাষনে কী বলেছিলেন তা ইউহোন্না ব্যতিত তারা সবাই স্মরণ করতে অসমর্থ ছিল৷
সাহাবিদের ভূলে যাওয়ার কারণে ঈসা মসিহ শান্তনা পেয়েছিলেন এবং তিনি জানতেন যে সত্যের রূহ তাদের আলোকিত এবং নবায়িত করতে তাদের কাছে আসবেন যে ব্যাপারে তাদেরকে তিনি প্রণোদিত করেছিলেন৷ পাক-রূহ ঈসা মসিহের কাজকে অব্যাহত রাখে একই চেতনা এবং উদ্দেশ্য নিয়ে৷ তিনি দুর্বলদের রক্ষা করেন৷ ঈসা মসিহ প্রতিভাবানদের পণ্ডিতদের যারা দর্শনশাস্ত্রে পারদশর্ী তাদেরকে বেছে নেননি বরং তিনি জেলে এবং কর গ্রহণকারী সাধারণ পাপীদের বেছে নিয়েছিলেন৷ করুণায় পূর্ণ পিতা তার রূহকে অযোগ্যদের কাছে পাঠিয়েছিলেন তাদেরকে তার সন্তান হিসেবে তৈরি করতে যাদেরকে তিনি নম্রতার জ্ঞান প্রদান করেছিলেন এবং তারা নিজেদেরকে অস্বীকার করেছিল এবং ন্যায়পরায়ণতার সাথে জীবন যাপন করেছিল৷
ঈসা মসিহ কাব্যিক ভঙ্গিতে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেননি অথবা কাউকে তিনি তার সুসংবাদ লিখতে নির্দেশ দেননি যে, তার কিছু পাতা হারিয়ে ফেলতে পারে অথবা বিষয় বস্তু ভূলে যেতে পারে৷ তিনি আস্থার সাথে প্রত্যাশা করেছিলেন সত্যের রূহ তার সাহাবিদেরকে সব কিছু শিক্ষা দিবে, তাদের আলোকিত করবে ও পথ নির্দেশনা করবে এবং তিনি যা কিছু বলেছিলেন তাদেরকে তা স্মরণ করিয়ে দেবে৷ আজ পর্যন্ত সুসংবাদ হলো পাকরূহের দ্বারা সৃষ্ট একটি মহত্ কাজ৷ তিনি মানুষের ভাষায় মুক্তির পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করতে প্রেরণ করেছিলেন যা তার সাহাবিরা স্মরণ করতো এবং পাক-রূহ তাদেরকে সেই সবগুলি স্মরণ করিয়ে দিত এবং শিক্ষা দিত এবং ঈসা মসিহের বাক্য প্রতিষ্টা করতো, যাতে করে পাক-রূহ পুত্রকে প্রেরিতদের সাক্ষ্যের মধ্য দিয়ে মহিমান্বিত করতে পারে৷ ঈসা মসিহের প্রেরিতদের দ্বারা লিখিত অন্য কোনো কিতাব বা বই আমাদের কাছে নাই যার মধ্যে দিয়ে দুনিয়ার কাছে তারা জ্ঞান এবং বিশ্বাসের ব্যাপারে উপস্থাপনা করেছিল৷ ঈসা মসিহের মুখের কোনো অতিরিক্ত কথা তারা যোগ করে নাই৷ তাদের ধর্ম প্রচার শীতল অথবা শুদ্ধ সংবাদের মতো নয় যা সেকেলে হয়ে যায় কিন্তু পাক-রূহ এই কথাগুলির প্রাণশক্তিকে আজকের দিন পর্যন্ত নবায়িত করে অব্যাহত রেখেছে৷ যখন আমরা সুসমাচার পড়ি তখন মনে হয় ঘটনাগুলি আমাদের সময় ঘটেছে৷ আমরা যদি ঈসা মসিহের বাক্য শুনি তাহলে মনে হয় তার কন্ঠস্বর আমাদের স্পর্শ করছে৷ কেউ যদি দাবি করে যে সাহাবিরা মূল সুসংবাদকে বিকৃত করেছে তাহলে সে সত্যের রূহকে অগ্রাহ্য করে যেহেতু পাক-রূহের মধ্যে কোনো প্রবঞ্চনা নেই; তিনি হলেন সত্য এবং ভালোবাসা৷
যোহন ১৪:২৭
২৭. আমি তোমাদের জন্য শান্তি রাখিয়া যাইতেছি, আমারই শান্তি আমি তোমাদের দিতেছি; দুনিয়া যেভাবে দেয় আমি সেইভাবে দিই না৷ তোমাদের মন যেন অস্থির না হয় এবং ভয়ও না থাকে৷
ঈসা মসিহ তার বিদায়কালীন ভাষণের শেষে শান্তি প্রদান করেছিলেন যে শান্তি সকল অভিবাদনকে ছাপাইয়া যায়৷ তিনি চলে যাচ্ছিলেন কিন্তু তাদের জামাতের মধ্যে তার শান্তি রেখে গেছেন৷ তিনি কোনো মিথ্যা শান্তির কথা বলেননি যেমন ক্ষুদ্র পত্র পত্রিকাগুলো তাদের সংবাদ ছাপাই৷ এটা নিশ্চিত যে প্রলোভন আসতে পারে, যেহেতু লোকেরা খোদা ব্যতিত জীবন-যাপন করে এবং তার ক্রোধ মানুষের অপরাধের জন্য তাদের উপরে নেমে আসে৷ ঈসা মসিহ ভিন্ন শান্তির কথা বলেন যে শান্তি চেতনার মধ্যে আসে এবং তা পাপের ক্ষমার মধ্য দিয়ে আসে এবং যা আমাদেরকে খোদার সাথে পুনর্মিলিত করে এবং যা জামাতের মধ্যে থাকে৷ ঈসা মসিহের শান্তি হলো পাক-রূহ যা চিরন্তন অক্ষয় শক্তি এবং যা খোদার কাছ থেকে তার কাছে এবং তাঁর মধ্যে আসে৷
মিথ্যা, ঘৃণা এবং বিশৃঙ্খলা, হত্যা, ঈর্ষা, লোভ এগুলি দুনিয়াতে ব্যপকভাবে বিস্তৃত৷ কিন্তু ঈসা মসিহ আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন আমরা যেন শয়তানের এই কাজগুলিকে প্রশ্রয় না দিই৷ শয়তান হলো এই দুনিয়ার যুবরাজ৷ কিন্তু প্রিয় ঈসার মধ্যে শান্তি বৃদ্ধি পায় যা আমাদেরকে বিষন্নতা এবং হতাশার মধ্যে পড়তে দেয় না৷ এটা আমাদেরকে অস্থির হৃদয় এবং মৃতু্যর ভীতি থেকে মুক্ত করে৷ মসিহে বিশ্বাসীরা খোদার মধ্যে বাস করে এবং খোদাও তাদের মধ্যে বাস করে৷ এটা কি আপনার জন্য প্রযোজ্য? ঈসা মসিহ প্রচণ্ড ঝড়ের ঢেউয়ে নৌকার মধ্যে ঘুমিয়ে থাকেন৷ নৌকার সবাই হতাশ হয়ে পড়েছিল যেহেতু তার মধ্যে পানি ঢুকেছিল৷ তখন ঈসা মসিহ জেগে উঠে ঝড়কে ধমক দিলেন এবং তাতে তা শান্ত হলো৷ তিনি তার সাহাবিদের বলেছিলেন, 'হে অল্প বিশ্বাসীরা, তোমরা ভয় পাচ্ছ কেন?'
যোহন ১৪:২৮-৩১
২৫. তোমরা শুনিয়াছ, আমি তোমাদের বলিয়াছি, 'আমি চলিয়া যাইতেছি এবং আবার তোমাদের নিকটে আসিব৷' তোমরা যদি আমাকে মহব্বত করিতে, তবে আমি আমার পিতার নিকটে যাইতেছি বলিয়া আনন্দ করিতে, কারণ পিতা আমার চেয়েও মহান৷ ২৯. এই সমস্ত ঘটিবার আগেই আমি তোমাদের বলিয়া রাখিলাম, যেন ঘটিলে পর তোমরা বিশ্বাস করিতে পার৷ ৩০. আমি তোমাদের সঙ্গে আর বেশিক্ষণ কথা বলিব না, কারণ দুনিয়ার কর্তা আসিতেছে৷ ৩১. আমার ওপর তাহার কোনো অধিকার নাই৷ কিন্তু ইহা ঘটিতেছে, যেন দুনিয়া জানিতে পারে যে, আমি পিতাকে মহব্বত করি এবং পিতা আমাকে যেমন হুকুম দিয়াছেন আমি সমস্ত কিছু তেমনই করিয়া থাকি৷ এইবার উঠ, আমরা এই জায়গা হইতে যাই৷
সাহাবিরা অস্থির হয়ে পড়লো যেহেতু তাদের প্রভু এই খবরটি পুনরাবৃত্তি করলো যে তিনি তাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছেন৷ বিদায়ের সময় কাছে এলো৷ আবার ঈসা মসিহ তার চলে যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত করলেন কিন্তু এ বিষয়ও তিনি বললেন, 'আনন্দ কর কারণ আমি তোমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছি কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি৷ আমার আসল দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য আনন্দ কর৷ আমি তোমাদের কাছে সলিবে ভোগান্তির মতো কিছু দিয়ে যাচ্ছি না৷ আমি তোমাদেরকে কবরের ভীতি থেকে মুক্ত করবো৷ পিতার সাথে তোমাদের একাত্বতার বিষয়ে তোমাদের কাছে এটা আমার বাণী৷ তোমরা যদি আমাকে ভালোবেসে থাক তাহলে আমার বেহেশতে ফিরে যাওয়ার জন্য আনন্দ করবে৷ আমি আমার পিতাকে নিজের থেকে বড় মনে করি৷ আমি তাকে অত্যন্ত ভালোবাসি, কিন্তু তোমাদের জন্য আমার ভালোবাসা কখনো শেষ হবে না৷ আমি তার রূহেরর মধ্য দিয়ে আবার তোমাদের কাছে আসব৷'
ঈসা মসিহ তাদের কাছে পিতার ব্যাপারে একটি বিশাল বর্ণনা দিলেন তার মহিমা পুরোপুরিভাবে উপলব্ধি করতে এবং তাকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখতে এবং তাদের প্রভুুূ তাদের ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের প্রস্তুত থাকতে বললেন যিনি মৃতু্য পর্যন্ত তাদের কাছাকাছি থাকবেন৷ ঈসা মসিহ তাদেরকে স্মরন করিয়ে দিতে চাইলেন যে এমনকি মৃতু্য কোনো অর্থ বোঝায় না যে খোদা তার প্রতিকূল৷ পিতা এবং পুত্রের মধ্যে শান্তি সর্বদাই স্থায়ী তাই পিতা তার মৃতু্যর পরে তাকে তার নিজের কাছে টেনে নেবে৷
এর থেকে বেশি কথা অপ্রয়োজনীয় ছিল; পিতার আদেশ সম্পন্ন করতে ঈসা মসিহ উত্থিত হয়েছিলেন এবং সেটা হলো সলিবের মধ্য দিয়ে দুনিয়ার নাজাতের কাজ৷ এরপর পাক-রূহ তার সাহাবিদের ওপর নেমে আসবে৷ এই মুক্তি সকল মানব জাতির জন্য প্রয়োজ্য৷ তিনি চেয়েছিলেন যে প্রতিটি মানুষ খোদার অসীম ভালোবাসার ব্যাপারে অবগত হবে৷
এরপর ঈসা মসিহ এবং তার সাহাবিরা উপরের কক্ষ ত্যাগ করলো যেখানে তিনি নুতন চুক্তিনামা দিয়েছিলেন এবং রাতের অন্ধকারে কিদ্রন উপত্যকা অতিক্রম করে চলে গিয়েছিলেন৷ তারা গেত্সেমানি বাগানের কাছাকাছি জৈতুন পাহাড়ে হেঁটে গিয়েছিল, যেখানে বিশ্বাস ঘাতকটি ওত্ পেতে ছিল৷
প্রার্থনা: প্রভু তোমার শান্তির জন্য আমরা তোমাকে ধন্যবাদ দেই৷ তুমি আমাদের হৃদয়কে পরিষ্কৃত করেছ এবং আমাদের বিশ্রাম দিয়েছ৷ ঘৃণা, সংঘর্ষ এবং কলুসতার তীব্র স্রোতের মধ্যে আমাদের দুশ্চিন্তা, ভয় এবং হতাশাকে ক্ষমা করো৷ তোমার রূহ আমাদেরকে শান্তির মধ্যে নিরাপদ রেখেছে এই জন্য তোমাকে ধন্যবাদ দেই৷ প্রলোভনের সময় তোমার শাক্তিমান বাক্যকে তিনি (রূহ) আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন যাতে করে আমরা পাপ এবং অবিশ্বাস অথবা হতাশায় না পড়ি, কিন্তু তোমার দিকে তাকিয়ে প্রত্যাশার মধ্যে প্রার্থনা করতে পারি এবং আনন্দের সাথে ধৈর্য্য ধরতে পারি৷ তোমাকে ধন্যবাদ দেই যে আমাদের পথ পিতার দিকে ফিরায়৷ হে খোদার মেষশাবক আমরা তোমার কাছে নতজানু হই কারণ বেহেশতে আমাদের জন্য তুমি একটি বাসস্থান তৈরি করেছ৷
প্রশ্ন:
কুইজ - ৫
প্রিয় পাঠক,
আমাদেরকে ১৪টির মধ্য থেকে ১২টি প্রশ্নের উত্তর পাঠিয়ে দিন৷ আমরা আপনাকে এই অধ্যায়ের পরিশিষ্ট পাঠাব৷
আপনার নাম এবং পূর্ণ ঠিকানা স্পষ্ট করে শুধু মাত্র খামের ওপর নয় কিন্তু প্রশ্নপত্রের ওপর লিখতে ভুলবেন না৷ নিচের ঠিকানায় এটাকে পাঠিয়ে দিন৷
Waters of life
P.O. Box 600 513
70305 Strttgart,
Germany
MJWT
G.P.O Box No. 3507
Dhaka-1000
BANGLADESH